কিভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকা যায় ? রোগ প্রতিরোধে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কেন জরুরী? Hygiene maintenance
কিভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকা যায়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থাকার উপায়।
শারীরিক পরিচ্ছন্নতা রোগের আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য আমাদের শারীরিকভাবে পরিচ্ছন্ন থাকা প্রয়োজন। দেহ অপরিষ্কার বা অপরিচ্ছন্ন থাকলে রোগ জীবাণু সহজে দেহে প্রবেশ করে। এজন্য পরিচ্ছন্ন থাকার নিয়ম গুলো পালন করতে হবে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।
বর্তমান করোনা মহামারীতে আমাদের উচিত মুখে মাস্ক ও অন্তত ২০ সেকেন্ড ভালো হবে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে এবং তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
নিয়মিত গোসল করা:
বিভিন্ন কাজকর্ম ও খেলাধুলা করার সময় গায়ে ময়লা লেগে শরীরের অপরিচ্ছন্ন হয় এতে শরীরে অনেক জীবাণু ঢুকে। এজন্য প্রতিদিন গোসল করা উচিত গোসলের সময় ভালোভাবে সাবান মাখা। এতে সহজে ময়লা ও ঘামের গন্ধ দূর হয়।
দাঁত ও মুখ পরিষ্কার রাখা:
সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং আহারের পর দাঁত ও মুখ ভালো হয়ে পরিষ্কার করতে হবে। দাঁত না মাজলে দাঁতের ফাঁকে খাদ্য কনা জমে মুখে দুর্গন্ধ ছড়ায় ও দাঁতের ক্ষতি করে এবং এর ফলে দাঁতে রোগ জীবাণুর আক্রমণ ব্যাথা বেড়ে যায়। তাই রাতে রাতে শোয়ার আগে দাঁত পরিষ্কার করা উচিত।
চুলের যত্ন নেওয়া:
শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয় বরং দেহের পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রতিদিন চলে যত্ন নেয়া প্রয়োজন। গোসলের পর প্রতিদিন দিয়ে ভালোভাবে চুল আঁচড়ানো ভালো। এতে চুলের গোড়া শক্ত হয় ও চুলের ভিতরে ময়লা জমতে পারেনা। প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিন দিন চুল ভালোভাবে সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে ধোয়া উচিত।
নিয়মিত নখ কাটা:
হাতের নখ একটু বড় হলেই কেটে ফেলা উচিত। নখ বড় হলে তার মধ্যে ময়লা জমে থাকে। খাওয়ার সময় সেই ময়লা খাবারের সাথে পেটে প্রবেশ করে এবং নানা রকম ফেটে অসুখ ও কৃমি হয়।
হাত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা:
হাত দিয়ে আমরা সব কিছু ধরি কোনরকম কাজকর্ম করে থাকি। এইজন্য হাতের ময়লা লেগে থাকে। হাত পরিষ্কার না করে সে হাত দিয়ে খাবার খাওয়া ঠিক নয়। কাবার আগে উপরে প্রতিবারই হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করা উচিত।
মলমূত্র ত্যাগ করা:
সকালে ঘুম থেকে উঠার পর মহামূত্র ত্যাগের অভ্যাস করা ভালো। মলমূত্র ত্যাগের ব্যাগ কখনো দমন করা উচিত নয়। দৈনিক খাদ্য তালিকায় ফলমূল থাকা ভালো। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না, সহজে মলত্যাগ করা যায় । প্রতিদিন একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের গড়ে 10 থেকে 12 গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন। এতে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ ঘাম ও প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যায়।
বসতবাড়ির পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা:
ঘর বাড়িতে যাতে পর্যাপ্ত আলো বাতাস সহজে প্রবেশ করতে পারে এজন্য প্রয়োজনীয় জানালা দরজা থাকতে হবে। ঘর ও এর আশপাশ সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। ঘরের মেঝে প্রতিদিন সকাল বিকেল মুছতে বা ঝাড়ু দিতে হবে। কাঁচা ঘর হলে মাঝে মাঝে লেপতে হবে। পাকা দালান হলে কয়েক বছর পর পর প্রয়োজনীয় মেরামত ও রং করা উচিত।
খাদ্য গ্রহণের নিয়ম: আপনার খাদ্য গ্রহণের যে সকল নিয়মগুলো পালন করা উচিত-
- নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে হবে।
- পচা বাসি খাবার পরিহার করতে হবে। যে খাদ্য হজমে সহজ হয়, তেমন খাবার খাওয়া উচিত।
- খাবার চিবিয়ে ও ধীরে ধীরে খেতে হবে।
- বেশি না খেয়ে পরমিত খাবার খেতে হবে।
- সব ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
- খাবারে শাকসবজি পরিমাণ বেশি থাকতে হবে।
পোশাক পরিচ্ছদ পরিচ্ছন্ন রাখা:
দেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, শীতের ঠান্ডা ও গ্রীস্মের রোদ থেকে শরীর কে রক্ষা করার জন্য সময়োপযোগী পোশাক পরা উচিত। কাপড় প্রতিদিন ধুয়ে শুকানো ভালো। ঘামযুক্ত বা দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করা কাপড় একনাগাড়ে পরা অস্বাস্থ্যকর।
খেলাধুলা ও ব্যায়াম করা:
শরীর সুস্থ ও সবল রাখতে খেলাধুলা ও ব্যায়াম করা অতি প্রয়োজনীয়। তবে মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত কোন কিছু ভাল নয়। পরিমিত অনুযায়ী খেলাধুলা ও ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে শরীর সুস্থ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সমূহ সুদৃঢ় হবে।
পরিমিত বিশ্রাম নেওয়া:
দৈহিক পরিশ্রম ও ব্যায়ামের ফলে দেহের কোষগুলো ক্ষয় প্রাপ্ত ও নিস্তেজ হতে থাকে। জীব কোষগুলো পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বিশ্রামের প্রয়োজন। একজন সুস্থ লোকের দৈনিক সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। এতে জীব কোষগুলো সতেজ ও মস্তিষ্কের কোষগুলোর ক্ষয় পূরণ হয়।
অভ্যাস গড়ে তোলা:
মানুষ অভ্যাসের দাস। তবে কিছু অভ্যাস আছে যা পরিত্যাগ করতে হবে। একবার অভ্যাস খারাপ হয়ে গেলে তা সংশোধন করতে সময় লাগে। সেজন্য সব সময় খারাপ অভ্যাস যাতে গড়ে না ওঠে, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
সুঅভ্যাস গঠনের জন্য যে সকল বিষয়গুলো অনুসরণ করা যেতে পারে-
- অধিক রাত পর্যন্ত জেগে না থাকা।
- সূর্য উঠার পরেও ঘুমিয়ে না থাকা।
- নির্দিষ্ট সময়ে পরিমিত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া।
- যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ না করা।
- অযথা সময় নষ্ট না করা।
এই সকল স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে আপনার জীবন সুন্দর ও বিকশিত হবে।